সর্বশেষ

Sunday, November 2, 2025

সরকার তরুণদের সুবিধা দিয়ে বিপথে নিয়েছে: সুব্রত চৌধুরী

সরকার তরুণদের সুবিধা দিয়ে বিপথে নিয়েছে: সুব্রত চৌধুরী



গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে কিছু তরুণকে বিপথগামী করেছে। তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করা জুলাইযোদ্ধাদের দ্বৈতনীতির পরিচায়ক। এনসিপির উচিত দরকষাকষি না করে অবিলম্বে সনদে সই করা।

শনিবার (১ নভেম্বর) রাজধানীর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি) প্রাঙ্গণে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নে করণীয়’ শীর্ষক ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের কতিপয় তরুণকে সুবিধা দিয়ে বিপথগামী করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘তারা ডিসি, ইউএনও অফিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে খবরদারি করছে। সরকারের অভ্যন্তরে আরেকটি সরকার গড়ে উঠেছে। ফলে সংস্কার প্রক্রিয়া ও আইনের শাসন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’গণভোট ইস্যুতে বিএনপি ও জামায়াতের মতপার্থক্য নিয়ে সংঘাতের আশঙ্কা নাকচ করে তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। যারা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলেন, তাদের জানাই—জাতীয় নির্বাচনে ৭০ শতাংশ ভোট পড়লে তা অংশগ্রহণমূলক বলে গণ্য হবে।’ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামীতে মনোনয়ন ও পদ বাণিজ্য বন্ধ করুন। দলের অভ্যন্তরে সংস্কার ও গণতন্ত্রায়ন অপরিহার্য। মেধাবীদের সমন্বয়ে একটি কার্যকর সংসদ গঠন করতে হবে।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জুলাই অভ্যুত্থানকে ‘সহিংস আন্দোলন’ বলে দেওয়া সাক্ষাৎকারকে ‘হাস্যকর ও ছেলেমানুষি’ আখ্যা দিয়ে সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার অব্যাহত থাকবে। তিনি গণহত্যা করে পলাতক। ভারতকে অনুরোধ করব, তাকে আশ্রয় দিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্যের সুযোগ দেবেন না। তাকে নিবৃত্ত করুন। আমাদের সঙ্গে শত্রুতাপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি করবেন না।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা রক্ত, জীবন, পঙ্গুত্ব ও অন্ধত্বের বিনিময়ে ফ্যাসিবাদ উৎখাত করেছে। জুলাই শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছে আজকের বাংলাদেশ। যে ঐক্যের বলে জুলাই অভ্যুত্থান সফল হয়েছিল, সনদ বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে সেই ঐক্যে এখন ফাটল ধরেছে।
জুলাই সনদকে ‘জাতির ঐতিহাসিক দলিল ও রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’ উল্লেখ করে হাসান আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘সনদ বাস্তবায়নের ওপর নির্ভর করছে আগামী বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। জুলাইয়ের চেতনা ব্যর্থ হলে রাষ্ট্র ব্যর্থ হবে, অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হবে। এ দায় কেউ এড়াতে পারবে না—বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি কেউই নয়।’
তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদের মাধ্যমে জনগণ ঐক্যের বাংলাদেশ চেয়েছিল। কিন্তু সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে দলগুলোর তীব্র মতভেদ অনৈক্যের বাংলাদেশ তৈরি করছে। এতে ফ্যাসিবাদী শক্তি ফিরে এলে কোনো দলই প্রতিশোধের আগুন থেকে রেহাই পাবে না। সুতরাং ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য এখন অপরিহার্য।

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ জানান, দেশি-বিদেশি অপশক্তি আসন্ন নির্বাচন ভন্ডুল করতে ষড়যন্ত্র করছে, বিভাজনের রাজনীতি উসকে দিচ্ছে। বর্তমানে ত্রিমুখী রাজনৈতিক সংগ্রাম চলছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে জাতিকে স্বস্তি দিতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে শুধু দল নয়, জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণেও কাজ করতে হবে।

‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনি কাঠামোর চেয়ে রাজনৈতিক সদিচ্ছা বেশি জরুরি’ শীর্ষক ছায়া সংসদ বিতর্কে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজকে হারিয়ে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি) চ্যাম্পিয়ন হয়। বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

Saturday, October 25, 2025

গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি : শিরীন পারভিন হক

গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি : শিরীন পারভিন হক



গৃহকর্মীদের মজুরি ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন প্রধান শিরীন পারভিন হক। আগামীতে যারা সরকার গঠন করবেন, তাদের কর্মপরিকল্পনায় ন্যায়পাল নিয়োগ এবং গৃহকর্মী সুরক্ষায় আইনি কাঠামো তৈরিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) এফডিসিতে গৃহকর্মীদের অধিকার সুরক্ষা নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ও গণস্বাক্ষরতা অভিযানের যৌথভাবে আয়োজিত ছায়া সংসদে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতা করেন নেটস বাংলাদেশ ও এডুকেশন আউট লাউড। সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

শিরীন পারভিন হক বলেন, নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্টভাবে গৃহকর্মীদের অধিকারের কথা বলা হয়নি, তবে বলা উচিত ছিল। তাদের বেতন কাঠামো নিয়েও কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব করা হয়নি। জীবনযাপনের ব্যয় বিবেচনা করে গৃহকর্মীদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারিত হওয়া উচিত। তাদের অধিকার রক্ষায় স্বতন্ত্র ন্যায়পাল নিয়োগ করা হলে জবাবদিহিতার চর্চা গড়ে উঠবে। গৃহকর্মীর মজুরি ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি।

তিনি বলেন, আগামীতে যারা সরকার গঠন করবে তাদের কর্মপরিকল্পনায় ন্যায়পাল নিয়োগ এবং গৃহকর্মী সুরক্ষায় আইনি কাঠামো তৈরি অগ্রাধিকার পাবে বলে আশা করি। অনেক ক্ষেত্রেই গৃহকর্মীদের বুয়া হিসেবে সম্বোধন করা হয়। এই ধরনের অমর্যাদামূলক ও আপত্তিকর শব্দ পরিহার করা উচিত। গৃহকর্মীদের নিবন্ধনের আওতায় আনা হলে তাদের সামাজিক স্বীকৃতি ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, একটি স্বৈরাচার সমাজব্যবস্থার ভেতরে একটি সংবেদনশীল, যত্নশীল পলিসি প্রত্যাশা করা যায় না। বিগত সরকারের আমলে গৃহকর্মীদের মতো অত্যন্ত সংবেদনশীল শ্রমিকদের কল্যাণে সরকার কোনো কিছুই করেনি। গৃহকর্মীদের জন্য একটি নীতি প্রণয়ন করলেও তা কখনো বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে গৃহকর্মীরা ব্রিটিশ দাসপ্রথার মতোই দাস দাসী হিসেবেই রয়ে গিয়েছে। ফলে তারা তাদের ন্যায্য অধিকার ও স্বীকৃতি থেকে এখনো বঞ্চিত। গৃহকর্মীরা পারিশ্রমিক, কর্মঘণ্টা, চিকিৎসা, ছুটি ও বিনোদনসহ কোনোটাই তারা অন্যান্য কর্মজীবী মানুষের মতো পাচ্ছে না। সময়ের পরিক্রমায় দাসপ্রথা বিলুপ্ত হলেও, গৃহকর্মীদের প্রতি অমানবিক আচরণ দেখে মনে হয় এটি সভ্য সমাজ ব্যবস্থার দাসপ্রথার নব্য সংস্করণ।

তিনি বলেন, আমরা গৃহকর্মীদের প্রতি মানবিকতা প্রদর্শন করতে না পারলে রাষ্ট্র যতই গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার, সুশাসন প্রতিষ্ঠা করুক না কেন আমরা এই রাষ্ট্রকে মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে বলতে কষ্ট হবে। একা সরকারের পক্ষে সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ গৃহকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে পরিবার, সমাজ, এনজিও এবং গণমাধ্যমসহ সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। তবে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ব্যতিত গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষা সম্ভব নয়। এ কারণে আগামী নির্বাচনের পূর্বে রাজনৈতিক দলগুলো যদি তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সমাজের অনগ্রাসর জনগোষ্ঠী গৃহকর্মীদের বেতন-ভাতা, ছুটি এবং বোনাসসহ অন্যান্য অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রম্নতি প্রদান করে তাহলে তাদের প্রতি মানুষের আস্থা ও সমর্থন বাড়বে। আমাদের দুঃখবোধ হয় স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের কোনো সংসদে গৃহকর্মীদের অধিকার নিয়ে কোনো কথা হয়নি, তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে সংসদ সদস্যরা সংসদে সোচ্চার হননি।

তিনি আরও বলেন, আশা করি হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে যে সংসদ গঠিত হবে সেই সংসদে অত্যন্ত সংবেদনশীল গৃহকর্মীদের অধিকারসহ ন্যায্য দাবি আদায়ে আলোচনা হবে। বিশেষ করে সংসদে যারা নারী সদস্য থাকবেন তারা গৃহকর্মীদের সুরক্ষায় অন্যান্য সাংসদদের নিয়ে ককাস গঠন করবে। যে কোনো গৃহকর্মীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ গৃহকর্মীর অধিকার সুরক্ষায় নিম্নের ১০ দফা সুপারিশ করেন: ১.উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গৃহকর্মীদের শ্রম আইনের অন্তভুর্ক্ত করায় তাদের বেতন, বোনাস, কর্মঘণ্টা, ছুটি দ্রুত শ্রম আইন অনুযায়ী বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ২. নিয়োগদাতা ও গৃহকর্মীর মধ্যে কাজের ধরন, সময়, বেতন, ছুটি ইত্যাদি উল্লেখপূর্বক লিখিত চুক্তি থাকা বাধ্যতামূলক করা। ৩. গৃহকর্মীদের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সরকার ও এনজিওগুলোকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ৪. আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে সহজে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা করা। ৫. গৃহশ্রমিক নিবন্ধন ও তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা। ৬. গৃহকর্মীদের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারিত্বে স্বাস্থ্যবীমা, দুর্ঘটনা বীমা ও প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করা। ৭. গৃহকর্মীদের প্রতি মানবিক হতে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গণমাধ্যম, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রচার—প্রচারণা চালানো। ৮. আহত অথবা নিহত গৃহকর্মীর পরিবারের যথাযথ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা। ৯. শিশু গৃহকর্মী নিয়োগ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া। ১০. নির্যাতিত, চাকরি হারানো গৃহকর্মীদের জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্র, স্বাস্থ্যসেবাসহ আইনি সহায়তার ব্যবস্থা করা।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ও গণসাক্ষরতা অভিযানের যৌথ অয়োজনে ‘আইন করে নয়, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিই গৃহকর্মীর অধিকার সুরক্ষা করতে পারে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি’র বিতার্কিকদের পরাজিত করে হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজের বিতার্কিকগণ বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, ড. এস এম মোর্শেদ, কবি জাহানারা পারভীন ও সাংবাদিক মো. আল-আমিন। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।


Friday, October 24, 2025

🎓 বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষার বৃত্তির সুযোগ

🎓 বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষার বৃত্তির সুযোগ

ঢাকার রাশিয়ান হাউসে সম্প্রতি একটি শিক্ষা সেমিনার ও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রাশিয়ান সরকারের কোটার আওতায় বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষার সুযোগ তুলে ধরা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে রাশিয়ান হাউসের নতুন পরিচালক আলেকজান্দ্রা এ. খলেভনইয়ার নিজের পরিচয় দেন এবং রাশিয়ার নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক প্রাক্তন শিক্ষার্থী, ১০০ জনেরও বেশি স্থানীয় আবেদনকারী এবং রাশিয়ায় অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা অনলাইনে অংশগ্রহণ করেন।

📢 প্রধান ঘোষণা:

  • রাশিয়ান সরকারের বৃত্তি কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

  • ২০২৬–২০২৭ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০০-তে দাঁড়িয়েছে, যা পাঁচ বছর আগে ছিল মাত্র ৬৫

  • এই বৃদ্ধি বাংলাদেশের মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং শিক্ষা ও বিজ্ঞানে দুই দেশের সহযোগিতা জোরদার করার রাশিয়ার প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে।

  • আলেকজান্দ্রা বলেন: “আমাদের লক্ষ্য প্রতিভাবান বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার সুযোগ দেওয়া, যাতে তারা দেশে ফিরে বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেন।”

🗓️ আবেদন সংক্রান্ত তথ্য:

  • আবেদনের সময়সীমা: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ – ১৫ জানুয়ারি ২০২৬

  • প্ল্যাটফর্ম:

  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:

    • বৈধ পাসপোর্ট

    • শিক্ষা সনদ বা ডিপ্লোমা

    • সর্বশেষ একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট

  • সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের পরবর্তীতে মেডিকেল ফিটনেস সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।

  • নির্বাচনের ক্ষেত্রে একাডেমিক ফলাফল, অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ এবং বিজ্ঞান, ক্রীড়া বা সৃজনশীল প্রতিযোগিতায় অর্জন বিবেচনা করা হবে।

  • নির্বাচন কমিটিতে থাকবেন রাশিয়ান হাউস, রাশিয়ান দূতাবাস এবং রাশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা।

🎯 আবেদনযোগ্য বিষয়সমূহ:

শিক্ষার্থীরা নিচের ক্ষেত্রে আবেদন করতে পারবেন:

  • ভোকেশনাল ও টেকনিক্যাল প্রোগ্রাম

  • স্নাতক, স্নাতকোত্তর, পিএইচডি

  • স্বল্পমেয়াদি পেশাগত উন্নয়ন কোর্স

বিষয় যেমন:

  • আইটি

  • ইঞ্জিনিয়ারিং

  • পদার্থবিজ্ঞান

  • রসায়ন

  • অর্থনীতি

  • আইন

  • কৃষি

  • স্থাপত্য

  • অভিনয়, নৃত্যকলা, সঙ্গীত

পোর্টালে রয়েছে ৪০০টিরও বেশি রাশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬,০০০টির বেশি প্রোগ্রাম

🗣️ বিনামূল্যে রুশ ভাষা কোর্স:

২৭ অক্টোবর ২০২৫ থেকে রাশিয়ান হাউসে সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেট ইউনিভার্সিটির একজন প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে বিনামূল্যে রুশ ভাষা কোর্স শুরু হবে।

ঢাকার রাশিয়ান হাউস আবেদন প্রক্রিয়া, নথি প্রস্তুতি এবং ভাষা কোর্সে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের সহায়তা করছে।

🤝 বাংলাদেশ-রাশিয়া শিক্ষাগত সম্পর্ক:

এই উদ্যোগ বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে শিক্ষাগত সম্পর্ককে আরও গভীর করবে এবং বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Sunday, October 19, 2025

চট্টগ্রাম বন্দরে ১২০০ টন কাঁচামালসহ জাহাজডুবি

চট্টগ্রাম বন্দরে ১২০০ টন কাঁচামালসহ জাহাজডুবি

বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলী নদীর মোহনায় চট্টগ্রাম বন্দরের সীমান্তে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে একটি লাইটারেজ জাহাজ ডুবে গেছে। শুক্রবার রাতে এমভি জায়ান নামক জাহাজে স্টিয়ারিং ত্রুটি দেখা দেয় এবং ইঞ্জিনেও সমস্যা দেখা দেয়। শনিবার সকালে উপকূলের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার সময় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের কাছে জাহাজটি ডুবে যায়। বন্দর চ্যানেলের কাছাকাছি এই ঘটনা সত্ত্বেও অন্যান্য জাহাজের চলাচলের কোনো বাধা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

জায়ান শিপিং লাইনসের অপারেশন অফিসার কাজী মোহাম্মদ শিবলু জানান, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে স্টিয়ারিং ফেল করলে জাহাজটি স্থির করে রাখা হয়। শনিবার সকালে তীরের দিকে নিয়ে যাওয়ার সময় জাহাজের অর্ধেকেরও বেশি অংশ ডুবে যায়। ঘটনার সময় জাহাজে থাকা ১৩ জন নাবিক সকলে নিরাপদে রক্ষা পেয়েছেন।লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সচিব এম এ রনি বলেন, পতেঙ্গা উপকূলের নেভাল একাডেমির কাছে চরে আটকে পড়লে জাহাজের তলা ফেটে যায় এবং তিনটি হ্যাচ দিয়ে পানি ঢোকে। ফলে জাহাজের প্রায় ৯০ শতাংশ অংশ ডুবে যায়। জোয়ারের সময় কেবল উপরের অল্প কিছু অংশ দৃশ্যমান হয়।চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, বন্দরের বহির্নেভার থেকে ১২০০ মেট্রিক টন সিরামিক শিল্পের কাঁচামাল লোড করে জাহাজটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। ডুবে যাওয়ায় সকল পণ্য ভিজে নষ্ট হয়েছে। তবে বন্দর চ্যানেলে অন্য জাহাজের আসা-যাওয়ায় কোনো সমস্যা নেই।

Saturday, October 18, 2025

জুলাই সনদ বানচাল হলে দেশ পিছিয়ে পড়বে, গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল

জুলাই সনদ বানচাল হলে দেশ পিছিয়ে পড়বে, গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল

 


বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ আসাদুজ্জামান বলেছেন, জুলাই সনদ একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। এটি অতীতের যেকোন বন্দোবস্তের চেয়ে স্বচ্ছ, সুগঠিত ও সুনির্দিষ্ট। এই সনদ আইনের পাতায় স্মরণীয় একটি ইতিহাস হিসেবে রয়ে যাবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নে যদি ব্যর্থ হই তাহলে আমরা আগামী প্রজন্মের কাছে ভিরু কাপুরুষের উপমা হয়ে থাকবো বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

শনিবার (১৮ অক্টোবর) এফডিসিতে গণতন্ত্র সুরক্ষায় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজিত ছায়া সংসদে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ আসাদুজ্জামান এসব কথা বলেন। সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। 

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এই সনদ বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ থাকলেও তা উত্তরণ সম্ভব। জুলাই সনদ নিয়ে তর্ক করা হলে তা হবে অনাহত বিতর্ক। এটা কোরআন বা বাইবেল নয় যে পরিবর্তন করা সম্ভব হবে না। ৩৬ জুলাইয়ের পরাজিত শক্তির ন্যারেটিভ গ্রহণ করে, আমরা যদি জুলাই সনদ বানচাল করতে চাই, তবে দেশ পিছিয়ে পড়বে। 
’৭২ এর সংবিধানকে অনেক কাটাছেঁড়ার মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকার আইনের শাসন ব্যাহত করে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিলো। জুলাই অভ্যুত্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হলে জনগণ তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পাবে। জুলাই হত্যার বিচারও স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়তে এগিয়ে যাবে। এই বিচারকার্য কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত হবে না।  বিগত ফ্যাসিস্টদের গুম-খুনের বিচারের সব প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে নেওয়া হয়েছে, যুক্তি-তর্ক চলছে, এখন রায়ের অপেক্ষা। জুলাই চেতনার অঙ্গীকারই এই বিচারের মূল ভিত্তি।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই সনদ জাতির এক ঐতিহাসিক দলিল। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপর আগামীর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। জুলাই সনদকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। জুলাই সনদ ব্যর্থ হলে ফ্যাসিবা শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠার শঙ্কা রয়েছে। দেশ অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে পড়তে পারে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হবে। আইন শৃঙ্খলার ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হবে। এই দলিলে বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘদিনের ন্যায়বিচার, ভোটাধিকার, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও মর্যাদার প্রতিফলন ঘটেছে।  এই সনদ বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বৈরাচারী কাঠামোর বিলোপ হবে। জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মাধ্যমেই আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পথরেখা আরো সুস্পষ্ট হলো, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আয়োজন নিয়ে শঙ্কা কেটে গেলো। তবে সুশাসন ও জবাবদিহিতা না থাকলে কেবল নির্বাচনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। জুলাই সনদ রাজনৈতিক দলগুলোর জাতীয় অঙ্গীকার হিসেবে জনগণের কাছে বিবেচিত হবে। যে অঙ্গীকারের মাধ্যমে দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে ক্ষমতার লোভ ত্যাগ করে জনকল্যাণে কাজ করবে রাজনৈতিক দলগুলো। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আগামীর ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ পরিচালিত না হলে জাতির প্রতি অবিচার করা হবে। আর যে দল জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবে না, জনগণ তাদেরকে ভবিষ্যতে প্রত্যাখ্যান করতে পারে। 

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হলে গণতন্ত্র সুরক্ষিত হবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি’র বিতার্কিকদের পরাজিত করে প্রেসিডেন্সী ইউনিভার্সিটি’র বিতার্কিকগণ বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক হাসান জাবেদ, সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মিশন ও সাংবাদিক মাইদুর রহমান রুবেল। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

Friday, October 17, 2025

জুলাই যোদ্ধাদের নতুন কর্মসূচি: সংসদে সংঘর্ষের পর মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা

জুলাই যোদ্ধাদের নতুন কর্মসূচি: সংসদে সংঘর্ষের পর মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা


ঢাকা, ১৭ অক্টোবর ২০২৫ – জাতীয় সংসদ ভবনে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণার সময় জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। দক্ষিণ প্লাজায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, টিয়ার গ্যাস ও লাঠিচার্জের মধ্য দিয়ে আন্দোলনকারীরা তাদের তিন দফা দাবির বাস্তবায়ন এবং হামলার প্রতিবাদে দেশব্যাপী নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) জুলাই যোদ্ধা সংসদের মুখ্য সংগঠক মাসুদ রানা সৌরভ এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি জানান, আগামী রবিবার (১৯ অক্টোবর) দেশের প্রতিটি জেলায় দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করা হবে।সৌরভ বলেন, “আমরা হামলার শিকার হয়েছি। এই অবরোধ আমাদের ওপর হওয়া হামলার প্রতিবাদ এবং তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য। জুলাই আহতদের সঙ্গে সাধারণ জনগণকে যোগ দিতে আহ্বান জানাচ্ছি। যদি আমাদের জীবন ও রক্তের স্বীকৃতি না পাই, তাহলে এ রাষ্ট্রে আর কোনো বিপ্লবী জন্ম নেবে না।”তিন দফা দাবি:
  • জুলাই শহীদদের ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান।
  • আহত ও পঙ্গুত্বগ্রস্তদের ‘বীর’ মর্যাদা দিয়ে সাংবিধানিক স্বীকৃতি।
  • আহত ও শহীদ পরিবারদের পুনর্বাসনের জন্য নির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা এবং আহতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত হামলা-হয়রানি বন্ধ রাখার জন্য দায়মুক্তি ও সুরক্ষা আইনের ব্যবস্থা।
ঘটনার সারাংশ:শুক্রবার সকালে ‘জুলাই শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধা’ ব্যানারে অসংখ্য আন্দোলনকারী সংসদ ভবনের ১২ নম্বর গেটের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দেন। একপর্যায়ে তারা গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে মঞ্চের সামনের অতিথিদের চেয়ারে বসে প্রতিবাদ চালান।দুপুর ১:২৬ মিনিটের দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ধাওয়া দিয়ে বের করে দেয় এবং সমগ্র সংসদ এলাকা ঘিরে রাখে। আহত যোদ্ধারা মঞ্চ থেকে সরানোর পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে—তারা বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে। পুলিশ ও এবিপিএন সদস্যরা সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং লাঠি হাতে বিক্ষোভকারীদের তাড়া করেন। দুপুর ২টার পরও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলতে থাকে।এই ঘটনায় কোনো রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে সই করেনি, যা আন্দোলনের আরও একটি দিক তুলে ধরেছে। জুলাই যোদ্ধারা জানিয়েছে, দাবি না মানলে আন্দোলন তীব্রতর হবে।

Monday, October 13, 2025

দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হলেও গণভোটের সুযোগ আছে: ড. বদিউল আলম মজুমদার

দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হলেও গণভোটের সুযোগ আছে: ড. বদিউল আলম মজুমদার

 


রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হলেও গণভোটের সুযোগ আছে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।  

 শনিবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) মিলনায়তনে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ‘আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হলেই গণতন্ত্র সুরক্ষিত হবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে বদিউল আলম মজুমদার এসব কথা বলেন। 


তিনি বলেন, আশা করছি, রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে। গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একদিনেই হবে কিনা এ ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। তবে এ বিষয়ে সরকার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত নেবে।

সুজন সম্পাদক বলেন, গণভোট যেন দেশের মানুষের সম্মতি পায়, গণভোটে যেন ‘হ্যাঁ’ ভোট পড়ে তার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে। শেখ হাসিনা সরকার স্বৈরাচারী ব্যবস্থা রেখে গেছে। জুলাই জাতীয় সনদ পাশের মাধ্যমে সেই কাঠামোর সংস্কার দরকার।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, জুলাই সনদ স্বাক্ষরের পর পরবর্তী সরকার সেটি বাস্তবায়ন না করলে তাদের পরিণতিও শেখ হাসিনার সরকারের মতো হবে। ক্ষমতার পালাবদল হলেও যেন দুর্নীতির পালাবদল না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। দেশে গণতন্ত্রের সুরক্ষায় সুষ্ঠু নির্বাচনের পাশাপাশি নির্বাচিত সরকারকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও দেশের রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন জানিয়ে সুজনের সম্পাদক বলেন, নির্বাচন ও রাজনৈতিক দল থেকে দুর্বৃত্তায়ন দূর করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও কার্যকর করা দরকার। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করা দরকার।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, শঙ্কা কাটিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে। জুলাই সনদ নিয়ে ঐকমত্যের বিষয় এখন সিলভার লাইন থেকে গোল্ডেন লাইনে পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্রকামী প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলই একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রত্যাশা করছে। দেশের মানুষও অপেক্ষায় আছে কখন তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। 

তিনি আরও বলেন, আগামী ১৫ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জুলাই সনদ স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর রেষারেষির কারণে জুলাই সনদ স্বাক্ষরে যদি প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়, তাহলে দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। বিগত ১৬ বছরের শাসন আমলে ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যায়, অত্যাচার, গুম-খুন হত্যাসহ জুলাই বিপ্লবে শহীদের হত্যার বিচার বাধাগ্রস্ত হবে। দেশের আইনশৃঙ্খলার ওপর গভীর প্রভাব পড়বে। পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি ফিরে আসার শঙ্কা তৈরি হবে। হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। আশা করি, বিভেদের রাজনীতি পরিহার করে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে ফ্যাসিস্টবিরোধী প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ থাকবে।

এর আগে ছায়া সংসদে তেজগাঁও কলেজ ও প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সিনিয়র সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক মো. হুমায়ূন কবীর ও সাংবাদিক জাকির হোসেন লিটন। 
প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।