Monday, March 17, 2025

দেশে ফিরতে চাইছেন না বিদেশ মিশনের কর্মকর্তারা



 নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রদূত, উপ-রাষ্ট্রদূত, কাউন্সেলর ও সচিব পদে নিযুক্ত প্রায় ২২ জন কূটনীতিককে তাদের নিজ নিজ মিশন থেকে ঢাকায় সদর দপ্তরে ফিরতে নির্দেশ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অনেক কূটনীতিককে তাদের বর্তমান মিশন থেকে বদলি করে অন্য দেশে যোগদানের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত অন্তত ১৪ জন কূটনীতিকের চুক্তি বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত বছরের ১৪ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান, জার্মানি, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতদের চুক্তি বাতিল করে সরকার। একই সময়ে মালদ্বীপে প্রেষণে নিযুক্ত হাইকমিশনারকেও দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর ২৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমকে ঢাকায় ফিরতে বলা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১ অক্টোবর ভারত, নিউইয়র্কে স্থায়ী মিশন, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগালে দায়িত্ব পালনরত পাঁচজন রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারকেও ঢাকায় ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে, এই নির্দেশনা মেনে এখনও অনেকেই দেশে ফিরে আসেননি।  

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তলব করা সত্ত্বেও কয়েকজন কূটনীতিক ফিরছেন না। তাদের মধ্যে সৌদি আরবে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী দেশে ফেরার নির্দেশ পাওয়ার পর দেশে না ফিরে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন বলে জানা গেছে। একইভাবে, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমও সরকারের নির্দেশনা মেনে দেশে ফিরে আসেননি। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত সাংবাদিক মিথিলা ফারজানা দেশে না ফিরে কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয়ে অবস্থান করছেন। এছাড়া, কলকাতা ডেপুটি মিশনের প্রথম সচিব আমিনুল পলাশও দেশে না ফিরে যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন। এই ইস্যুতে সর্বশেষ আলোচনায় এসেছে মরক্কোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হারুন আল রশিদের নাম। দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়ার পর তিনি তা না মেনে কানাডায় চলে গেছেন। সেখান থেকে সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এখন পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যাদের চুক্তি বাতিল করেছে, তাদের অনেকেই দেশে ফিরে আসেননি।  

বিদেশে আশ্রয় নেওয়া কয়েকজন কূটনীতিক জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো বিধান না থাকায় বর্তমান সরকারের কোনো আদেশ তারা মানতে রাজি নন। তারা বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে কাজ চালিয়ে নিতে আমরা দেশে যাব না। দেশে গেলে আমাদের নানাভাবে হয়রানি করা হবে। এছাড়া, দেশে ফিরলে জীবনের ঝুঁকি রয়েছে, তাই আমরা দেশে ফিরে যাব না।”  

তবে, যারা অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশ অমান্য করে দেশে ফিরে আসেননি, তাদের নিয়ে কঠোর কিছু ভাবছে না মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, “যারা আগের সরকারের আমলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন, তাদের সঙ্গে এরই মধ্যে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। যাদের চুক্তি বাতিল হয়েছে, তারা দেশে না ফিরলে তো কিছু করার নেই।”


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.

0 coment rios: