পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনারদের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও অরাজকতার অভিযোগে বিএসইসির পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লাহকে (৫১) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। এর আগে ভোরে পটুয়াখালীতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে কালবেলাকে জানিয়েছেন শেরে বাংলা নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল কাইয়ুম।
তিনি বলেন, অভিযুক্ত আসামিদের ধরতে প্রতিদিন অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অভিযানেই মোহতাছিন বিল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে বিএসইসি চেয়ারম্যানের গানম্যান মো. আশিকুর রহমান বাদি হয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
ওই সময়ের ওসি গোলাম আজম মামলার বিষয়ে বলেছিলেন, প্রাথমিক তদন্ত কাজ চলছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রেফতার আছে কিনা জানতে চাইলে ওসি কালবেলাকে বলেছিলেন, ‘এখনো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। বিষয়টি ঊর্ধতন কর্মকর্তারা দেখছেন।’
তিন দিন পার হলেও একজন আসামিকেও গ্রেফতার করতে না পারায় ওসি গোলাম আজমকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার স্থলে ওসির দায়িত্ব পান আব্দুল কাইয়ুম। তিনি যোগদান করেই একজনকে গ্রেফতার করেছেন। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
মামলায় ১৬ আসামি হলেন- বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান (৫৮), নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম (৫৭), নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম (৫৪), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লাহ (৫১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), যুগ্মপরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপপরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫), উপপরিচালক আল ইসলাম (৩৮), উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম (৪২), উপপরিচালক তৌহিদুল ইসলাম (৩২), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), সহকারী পরিচালক রায়হান কবীর (৩০), সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন (৩০), সহকারী পরিচালক আব্দুল বাতেন (৩২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী(৩১) ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফকে (২৯)।
এরমধ্যে ১৩ কর্মকর্তাকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
এর মধ্যে গত সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত ৬ জনকে এবং গত রোববার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানা ৭ জনকে জামিনের আদেশ দেন।
জামিন পাওয়া আসামিরা হলেন-বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম (৫৭) এবং রেজাউল করিম (৫৪), যুগ্ম পরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপ-পরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫) এবং শহিদুল ইসলাম (৪২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী (৩১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), রায়হান কবীর (৩০), আব্দুল বাতেন (৩২), সাজ্জাদ হোসেন (৩০), ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফ (২৯) ও উপ-পরিচালক আল ইসলাম (৩৮)।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে এবং কমিশনার মো. মহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখের উপস্থিতিতে কমিশনের নির্ধারিত সভাকক্ষে সভা চলাকালে অভিযুক্তরাসহ আরও কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী কমিশনের সভাকক্ষে জোরপূর্বক ও অনধিকার প্রবেশের মাধ্যমে কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনারদেরকে অবরুদ্ধ করে। এরই মধ্যে পূর্ব পরিকল্পনা মতে এবং অবৈধ বাঁধা যারা সৃষ্টি করার জন্য আসামিরা কমিশনের মূল ফটকে তালা দেয়। সিসি ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই, কমিশনের লিফট বন্ধ করে দেয় এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে মারাত্মক অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে গুরুতর জখমের প্রচেষ্টা করে।
0 coment rios: