যুক্তরাষ্ট্র সরকার সম্প্রতি বাংলাদেশে ভ্রমণের বিষয়ে তাদের নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৮ এপ্রিল হালনাগাদ করা ভ্রমণ নির্দেশিকায় তৃতীয় স্তরের সতর্কতা (পুনর্বিবেচনা করুন) এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য চতুর্থ স্তরের সতর্কতা (ভ্রমণ নিষিদ্ধ) ঘোষণা করেছে। এই সতর্কতা মূলত বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অপরাধের হার, সন্ত্রাসবাদ এবং পার্বত্য অঞ্চলের নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকির পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে যে: বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে আকস্মিক বিক্ষোভ দেখা দিতে পারে, যা সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বিদেশি নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকায় ছিনতাই, চুরি এবং অবৈধ মাদক কারবারের ঘটনা বেড়েছে, যা বিদেশি নাগরিকদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ, সন্ত্রাসবাদ এবং অপহরণের ঘটনা ঘটছে, তাই সেখানে মার্কিন নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনশীল এবং অনিশ্চিত। হুটহাট বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়, যা যেকোনো সময় সহিংস হয়ে উঠতে পারে। এ ধরনের সমাবেশে বিদেশিদের অংশগ্রহণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, কারণ এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হতে পারে এবং নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
ঢাকার বড় শহরগুলিতে অপরাধের হার বেড়েছে। মার্কিন সরকার পকেটমার, ছিনতাই ও চুরি থেকে সাবধান থাকার পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষ করে: গাড়িতে চলাচলের সময় দরজা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মানিব্যাগ এবং মোবাইল ফোন সাবধানে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্ধকারাচ্ছন্ন ও কম জনবহুল এলাকায় একা না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মার্কিন নাগরিকদের খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান ভ্রমণে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ এই অঞ্চলগুলোতে: সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।
অপরাধীচক্রের মাধ্যমে অপহরণের প্রবণতা বেড়েছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ও রাজনৈতিক সংঘর্ষ বেড়েছে, যা বিদেশি নাগরিকদের জন্য অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশে অবস্থানরত বা ভ্রমণেচ্ছু নাগরিকদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে: STEP (Smart Traveler Enrollment Program)-এ নিবন্ধন করা, যাতে দূতাবাস থেকে জরুরি সতর্কতা পাওয়া যায়। নিজেদের অবস্থান এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অনিরাপদ এলাকায় না যাওয়া এবং সব ধরনের বিক্ষোভ এড়িয়ে চলা। পার্বত্য এলাকায় ভ্রমণের প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি নেওয়া।
বাংলাদেশে ভ্রমণের আগে মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ভালোভাবে যাচাই করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ্রমণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এবং ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে অপরাধের বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে সব ধরনের সতর্কতা মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ আই/এম.আর