ঢাকা: সম্প্রতি চীন সফরে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যকে স্থলবেষ্টিত (ল্যান্ডলকড) বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই সাতটি রাজ্যের সমুদ্র প্রবেশের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একমাত্র অভিভাবক। তার এই মন্তব্যের পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি করিডোর, যা চিকেনস নেক নামে পরিচিত, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে ভারত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে ভারত এই গুরুত্বপূর্ণ করিডোরটি রক্ষা করার জন্য বিশেষ সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। শিলিগুড়ি করিডোর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যকে দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করে। করিডোরটির দুই পাশে নেপাল ও বাংলাদেশ এবং উত্তরে ভুটান অবস্থিত।
ভারতের সেনাবাহিনী শিলিগুড়ি করিডোরকে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা লাইন হিসেবে উল্লেখ করেছে। করিডোরের কাছে সুকনায় অবস্থিত ত্রিশক্তি কর্পস এই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই কর্পস রাফায়েল যুদ্ধবিমান, ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র এবং উন্নত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত।
ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্যে করিডোরের নিরাপত্তার বিষয়ে ভারতের অবস্থান আরও জোরদার হয়েছে। তিনি বলেন, চিকেনস নেক ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক অঞ্চল। এখানে যেকোনো হুমকির ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বাহিনীকে দ্রুত মোতায়েন করা সম্ভব।
ড. ইউনূসের মন্তব্যের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে দীর্ঘতম উপকূলরেখা ভারতের রয়েছে এবং এই অঞ্চলে ভারতের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চিকেনস নেকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার মাধ্যমে ভারত তার ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।